Header Ads

Header ADS

রুহিত...

রুহিত...
কেমন আছো রুহিত?
অনেক দিন দেখা নেই। কাল হঠাৎ অনন্যার সাথে পল্লবিতে দেখা! ভাবলাম তোমার ঠিকানা নিয়ে, আড়াল করে রাখা তোমার পুরুনো বাগানটা একটু তছনছ করে দেই!!
তোমার মনে পড়ে আমাকে রুহিত?
আমার পড়ে! বহুবার, বহুদিন, বহু বসন্তে তোমাকে মনে পড়েছে!!
তুমি কি এখনো পেট এর ব্যথায় কাতরাও?? মাথা ব্যথাটা কি এখনো উঠে?
এখনো কি সেই মনভুলাই আছো? রাতে খেতে ভুলে যাও?
মনে আছে রুহিত! এক চাদরে জরাজরি করে, শীতের সন্ধ্যায় আমরা কফি খেতে যেতাম আর এক কাপ কফি ভাগ করে খেতাম?
মনে আছে তোমার, ভোরের আলো ফুটার আগেই চুপিসারে শ্রাবন্তীদের গাছের তলে বিছিয়ে থাকা শিউলী ফুল গুলো কুড়িয়ে, তোমার জানালার পাশে রেখে আসতাম?
ল্যাম্প পোস্টের আলোয় জ্বোছনা ছুঁতে না পারায়, দুজনে মিলে দূরের কোন আধাঁরের খুঁজে হেঁটে বেড়াতাম!
মনে আছে তোমার? অনেক দিন আগের কথা! আমি কিন্তু ভুলিনি রুহিত!
মনে আছে, আমার একলা রাতের গল্প হয়ে তুমি আমার কপালে চাঁদ এঁকে, আমায় ঘুম পারাতে?
কতবার চেয়েছি আমি তোমায় ঘুম পাড়াবো, কিন্তু প্রতিবার আমি ঘুমিয়ে যেতাম তোমায় রেখে!
মনে আছে তোমার? আমার নি:শ্বাসের শব্দ না শুনলে তোমার ঘুম হতনা?
আজ তুমি ঘুমোও ঠিকি, আমি এখনো জেগে থাকি।
রাত আসে, ঘুম আসেনা!
ঘুম পাড়ানী গল্প আর শোনা হয়না।
রাতের আধাঁরে ঝি ঝি পোকার শব্দে সৃতি গুলো হাতিয়ে বেড়াই!
জানো রুহিত! যে চুলের স্পর্শের জন্য আমার প্রতি তোমার ভালবাসা যেত বেড়ে, সেই চুল কবেই পড়ে গেছে!
এখন আর গুচ্ছ গুচ্ছ রেশ্মী চুল গুলো আগের মত নেই।
ডাক্তার বাবুর ছাই পাশ ঔষদ খেয়ে সব গেছে!
ও হ্যা, বলতে ভুলে গেছি, যে সোনার কাকঁন গুলো তুমি পড়িয়ে দিয়েছিলে, গেল বছর তা শাহীন কাকার মেয়ের বিয়েতে দিয়ে দিলাম।
সোনার কাকঁন ছাড়া হতভাগীর বিয়ে হচ্ছিলনা।
আর যে বট গাছটার নীচে বসে আমাদের সপ্ন গুলো বুঁনা হত, ওই গাছটাও মোড়ল কাকা কেটে দিয়েছে।
জানো রুহিত, তোমার লেখা শেষ চিঠিটা আজো আছে। লেখা গুলো অস্পষ্ট! ভাজে ভাজে দাগ পড়েছে। গোলাপের পাপঁড়ি গুলো শুকিয়ে মচমচে! এখনো অবসর সময়ে, পাপঁড়ির ঘ্রান নেয়ার বৃথা প্রয়াস চালাই। গোটা গোটা হাতের লিখা গুলো বার বার পড়ি।
চোখ ভিজে উঠে!
ভেবনা তোমায় না পাওয়ার কষ্টে!
বয়স হয়েছে তো! চোখে নানান রোগ!
স্মৃতি শক্তিও অনেকটা লোপ পেয়েছে, এখন আর আগের মত ভাবতে পারিনা! মস্তিষ্কে জ্বালা ধরে!
মনে পড়ে রুহিত? একরাতে আমরা যখন জোস্নাবিলাসী করতে করতে মোড়ল কাকার বটগাছটার নিচে গিয়ে বসেছিলাম! তুমি আমার হাতের উপর হাতটি রেখে বলেছিলে; তোমার পাশে কি একটু জায়গা হবে?
বলেছিলাম; বুকের ছাতি বিছিয়ে দিলাম, পুরোটা নিয়ে নাও!
তখন তুমি বিঃস্বরণে মরে যেতে যেতে হাতদুটো আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়েছিলে!
সেদিনের সেই ক্ষণের কথা আজো ভুলা গেলনা!
জানো রুহিত; বহুকাল ঘরের বাহির হয়না, ইচ্ছে করে আড়ালেই থাকি! আজ বহুবছর পর বাইরে উঁকি মেরে তাকিয়ে দেখি; পুরো পৃথিবীটা অসুখে ভরা, চারিদিকে কষ্টকাধায় মাখামাখি! এই যে পৃথিবীর হরেক রঙা মানুষ গুলো, কারো সাথে কারো মিলেনা কেন? একি মাটিতে গড়া। উদ্দেশ্য গন্তব্য একি! তবে কেন এত অমিল? এত বিষাদ !!!
একে অন্যের প্রতি নিঁখাদ মায়া। ভালবাসায় কানায় কানায় পুর্ন। ১ যুগ ২ যুগ একি বিছানায় পাশাপাশি! তবু যেন কি নেই! কোথায় যেন কি এক অসীম শূন্যতা! কার ভালবাসা কে বুঝে! কার কান্না কে শুনে! সবাই শুধু নিজের ভাগেরটা বুঝে!
ভাবি; পৃথিবী কি জানে, যখন তার এক ভাগে কেউ খিলখিল করে হেসে উঠে, অন্য ভাগে তখন কিছু মানুষের মৃত সত্বা কেঁদে মরে! হাতে গোলাপ, হ্নদয়ে বিষাদের জ্বালা নিয়ে চিরচেনা প্রেমিকা এগিয়ে যায় তার ভালবাসার দাবী নিয়ে প্রিয়জনের কাছে!
পাশাপাশি শুয়ে গায়ের গন্ধে বিভোর দুজনার মন ছুটে যায় দুই মেরুতে! দেহের ক্ষত তো দৃশ্যমান। মনের ক্ষত দেখার কোন যন্ত্র আছে কি !!
এইযে সয়ে যাওয়া, এই যে মানিয়ে নেয়া, এত কিছু কেন? নারী বলে? নাকি মানুষ বলে ? নাকি কেবল বেঁচে থাকার জন্যে?
যদি বেঁচে থাকাই মূখ্য হয়, তবে কেন নয় জীবন্ত ঘাঁশফড়িং কিংবা মাটির গায়ে বিছিয়ে থাকা ভেজা সবুজ হয়ে !!
জীবনের নির্মল শুদ্ধতা গুলো কেন ঢাকা পরে যায় এক খন্ড ভুলের আড়ালে ! ধরিত্রীর কি ক্ষমা বর্ষনের সময় এখনো হয়নি !!!
আমি আবারো আসবো। এক জনম যথেষ্ট নয় !!! অনেক প্রশ্ন বাকি। অনেক হিসেব বাকি !
জানো রুহিত, এসব ভাবতে ভাবতে একসময় ভাবনার কোলে ঘুমিয়ে পড়তাম! এখন আর তেমন কিছুই ঘটেনা! আমি যে বুড়ো হয়ে গেছি!!
মনে আছে রুহিত, আমার একটা সপ্ন বাক্স ছিল?
২১ টা সপ্ন জমা করেছিলাম তোমায় নিয়ে!
এখন আরো ৬ টা সপ্ন জমা করেছি। লাল, নীল, বেগুনী, হলদে হরেক রকমের সপ্ন!
বাক্সে আমার ধুলি পড়ে আছে। বহু বছর খুলে দেখিনি। তবে সপ্ন গুলোতে বিষাদের শ্যাওলা জমে গেছে।
গুধুলী লগ্নে কোন একদিন সময় করে এসো।
আমার বহু বছরের পুরানা সপ্ন গুলো একটু ছুঁয়ে যেও, নয় সংগে করে নিয়ে যেও।
আর যদি পারো, কোন জলদস্যু কিংবা প্রভুর খোজ দিও।
যদি সপ্নের বাক্সটি বেচঁতে পারি!!!
-

No comments

জনপ্রিয় পোষ্ট

  জন্ম নিবন্ধন করবেন ভাবছেন, আর ভাবনা নয় সপ্ন এখন সত্যি সব এখন হাতের মুঠোয়, [ http://bdris.gov.bd/br/application ]( http://bdris.gov.bd/br...

Powered by Blogger.