Header Ads

Header ADS

মানব সত্তা!

মানব সত্তা!
.
মেনে নেয়া গেলে জাগতিক রুপ-রস সব কিছুই উপভোগ করা যায়।
মানিয়ে নিতে গেলেই যত বিপত্তি। জন্মান্ধ আত্মপরিচয়ে আঁখিদ্বয়ে যে স্বাভাবিকতা লক্ষ্যনীয়, সয়ে সয়ে ক্ষয়ে যাওয়া আঁখি যুগল কি সেই৷ স্বাভাবিকতা ধারণ করে?
দাদীমা বলতেন; দাঁত চেপে ঢোঁক গিলে ভাত কি হজম হয়? হজম করতে চিবাতে হয়!
বিদ্যুৎকে লোহার তার দিয়ে বাঁধানো মানুষ অতীতকেও বর্তমানে বন্দী করতে পেরেছে। সেই মানুষ কি পেরেছে শব্দকে দমিয়ে নিঃশব্দে বন্দী করতে? পারেনি।
শব্দ বলতে যদি ভাসমান সংগীতকে বুঝে থাকেন তবে যথার্তই বুঝেছেন। জাগ্রত আত্মার আনন্দধ্বনিকে বন্দী করা মানুষের পক্ষে আদৌ সম্ভব হয়নি, হবেও না।
বর্ণহীন রক্তপাতে ভিতর ক্ষত-বিক্ষত, বাহিরে স্নিগ্ধ হাসি, নিঃশ্বাস চাপা গোঙ্গানী গলা চেপে আছে, বাহিরে মধুর বানী- এই নারীর প্রকৃত অবস্থান।
এই অবস্থান থেকে বিচ্যুত হলেই পরিবার ও সমাজ নারীকে ছুঁড়ে ফেলে মহাসমুদ্রে! হাবুডুবু খেতে খেতে সাঁতার জানা নারীও তখন ডুবে যায় সমুদ্র তরঙ্গে। ডুবে গেলেই নারীর মুক্তি। কোন রকমে ভেসে উঠলেই আমৃত্যু নারীকে ‘হয় মেনে নেয়া, নয় মানিয়ে নেয়ার’ জীবনচক্রে পতিত হতে হয়। জীবনচক্র ঘূর্ণয়নে নারী শুধু মেনে নেয়' নয় মানিয়ে যায়।
তাদের কথা আত্মজীবনী আকারে ইতিহাসের পাতায় সুরক্ষিত থাকেনা। কেননা, ইতিহাস সব সত্য গলধকরণের ক্ষমতা রাখেনা।
তবে শুনুন এক ষোড়শীর কথা, বিষন্ন মনে হেঁটেছিনু লেকের ধারে, খোলা আকাশ বড্ড ভালো লাগে, পূবালী বাতাসে প্রাণটা কেবল জুড়িয়ে যায়, যেতে যেতে কতশত পিপিলিকা যে মাড়িয়ে গেলাম, অতঃপর হেঁটে গেলাম আরো কিছুদূর, রাস্তার পাশে তখন বসে ছিল ঘোমটা টানা এক মেয়ে, পাশে তার মা আমাকে দেখেই আকুল হয়ে ডাকলেন, বললেন; “কয়টা টাকা দেন মা! আজ দুইদিন কিছু খাইনি”
নিদারুন সহমর্মিতায় তাকালাম মেয়েটির দিকে মুখের একাংশ যেখানটায় ঢাকা, সেখানটায় পোড়া দগদগে ঘা, জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে ওর? অশ্রু বিসর্জিত মা জানালেন, ধর্ষন শেষে এসিড ছুড়া হয়েছিল তার মুখে!
বুঝে নিলাম, উড়ন্ত মেঘে আজ শকুনের মেলা!
মনের আকাশ থেকে কুয়াশা ভেজা মেঘ সরিয়ে ঘুরে দাঁড়ালাম বাড়ীর পথে, সুখের খোঁজে ভুলেই গিয়েছিলাম গোটা পৃথিবী অসুখে ভরা নিশ্চিন্ত জীবন, তবু ক্ষুদ্র আঘাতে বিচার বহির্ভূত আহ্লাদী মন কেঁদে উঠে যখন তখন।
অর্থনৈতিক টানাপোড়ন সেদিন ষোড়শীকে শিখিয়ে দেয়, অভাবের কাছে মানুষ কত অসহায়!
হ্যা! হয়ত সেই মেয়েটিও একদিন নিজ অধিকার ও স্বাধীকার ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল। ঝড়ের দাপটে ভেঙ্গে পড়তে পড়তে যেমন মাটি আঁকরে থাকা শক্ত বৃক্ষটি সোজা হয়ে দাঁড়ায়, ষোড়শীও সেদিন শত প্রতিকূলতায় নিজের আত্মঅহংকার ও আত্ববিশ্বাস হারায়নি বরং দূর্বার উদ্দ্যমে নিজেকে রক্ষা করার মনোবল ধরে রেখেছিল! কিন্তু পারেনি।
আহ; মানব সত্তা!
কেন মানিয়ে নিতেই হবে? কেন মেনে নিতেই হবে? মেনে না নিয়ে প্রেক্ষাপট বদলে দিলে? মানিয়ে না নিয়ে দৃশ্যপট অস্বীকার করলে?
মাঝেমধ্যে প্রশ্ন জাগে' জীবনটা আসলেই কি?
যখন থেকে নিজেকে জেনেছি, তখন থেকেই জীবনের সমীকরণ মিলাতে ব্যাগ্র হয়েছি। তখন জানতামনা জীবনের অর্থ কি!
আজ মনে হয়, জীবন মানেই শুধু সমাধানে সমীকরণ নয়, এখানে দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি সর্বপ্রথম। দৃষ্টিভঙ্গির উদারতায় সমাধান আশান্বিত সমীকরণটি সহজেই মেলানো যায়।
খুব কঠিন নয়।
জন্ম নিলাম, বড় হলাম, ভাল চাকরী হল, সুখের সংসার হল কিংবা রোগে শোকে- অনুতাপে লড়াই শেষে একদিন মরে গেলাম, এটাই কেবল জীবন হতে পারেনা। জীবনকে স্বার্থকরুপে বাঁচিয়ে রাখতে' পৃথিবীর বুকে এমন কিছু করে যাওয়া বা রেখে যাওয়া প্রয়োজন যাতে করে মৃত্যুর পরও আমরা স্বীয়কর্মে মানুষের মনে বেঁচে থাকি!
জীবন সর্বদাই অমূলক লড়াই নিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরীতে চলার পথে গতিরোধ করতে ভালবাসে।
সে লড়াইয়ে আমরা অভ্যস্ত। পার্থক্য শুধু, কেউ জীবনের বৈরীতায় হেরে যায়! কেউ জীবনকে হারিয়ে দেয়।
-

No comments

জনপ্রিয় পোষ্ট

  জন্ম নিবন্ধন করবেন ভাবছেন, আর ভাবনা নয় সপ্ন এখন সত্যি সব এখন হাতের মুঠোয়, [ http://bdris.gov.bd/br/application ]( http://bdris.gov.bd/br...

Powered by Blogger.