হাঁটলেন তো হার্ট কে বাঁচালেন।
হাঁটলেন তো হার্ট কে বাঁচালেন।
-------------------------
বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে হঠাৎ দেখলাম দোকানদার আমাকে ঠকিয়েছে। বয়স আর কতই বা। ফোর-ফাইভ এ পড়ি। ঠকানোই তো স্বাভাবিক! আমিও বেশ চালাক ছেলে! দোকানীকে ধরে ফেললাম।
: কি ব্যাপার বোতলে ফ্রী লিখা আর আপনি দিচ্ছেন না, কারণ কি?
তখন ফ্রীর যুগ সাবান কিনলে সোপকেস ফ্রী টাইপের।
দোকানদার হতচকিত হয়ে বলল
: দেখি কি ফ্রী
আমি দেখিয়ে দিলাম 'কোলেষ্টেরল ফ্রী' লিখা ইংরেজীতে।
দোকানী ইংরেজি জানে না কিন্তু যখন সে বলল
: আচ্ছা বাবা এই 'কলেষট্যারল' টা কি জিনিস?
এবার আমার অবাক হওয়ার পালা। পুরাই লা জওয়াব!
এই কথা মনে পড়লে এখনো হাসি পরে জেনেছিলাম এই ফ্রী মানে 'কোলেষ্টেরল মুক্ত'। কিন্তু কেন সয়াবিন কে কোলেষ্টেরল ফ্রী করা হলো তা জেনেছি অনেক পরে।
.
আমাদের শরীর যদি একটা ছোট্ট শহর হয় তবে এই শহরের প্রধান মাস্তান হচ্ছে এই কোলেষ্টেরল। এর সাথে কিছু সাংগ পাংগ আছে। তবে প্রধান সহযোগী ট্রাইগ্লিসারাইড। এদের কাজ হচ্ছে রাস্তায় রাস্তায় মাস্তানি করা, মেয়েদের টিজ করা এসব। হৃৎপিন্ড হলো এই শহরের প্রাণকেন্দ্র। শহরের সব রাস্তাগুলো এসে মিশেছে প্রাণকেন্দ্রে এসে।
.
মাস্তানের সংখ্যা বেশী হলে কি হয় আপনারা সবাই জানেন। এরা সব রাস্তাগুলো ব্লক করে দিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র অচল করে দিবে। আপনিও তখন পটল তুলবেন। না তুললেও মাস্তানদের ধর্মঘটে প্রায়ই আপনার প্রিয় শহরে এমন কিছু ঘটবে যে আপনি বেঁচেও মৃতপ্রায় হয়ে থাকবেন। বিয়েতে হাতের রিং তখনও হয়ত হাতেই আছে সাাথে হার্টেও রিং পড়তে হবে!
.
আমাদের শরীর নামক শহরে কি পুলিশ নেই? যারা মাস্তানদের ক্রসফায়ার করবে,
অথবা জেলে ভরবে।
হ্যাঁ, আছে। তার নাম এইচ ডি এল।
ও পাড়ায় পাড়ায় মাস্তানী করা এসব মাস্তানদের রাস্তা থেকে তুলে এনে জেলে ভরে রাখে। জেলখানা চিনেন তো? লিভার বা কলিজা হল জেলখানা । লিভার এইগুলোকে বাইল সল্ট বানিয়ে শহরের পয়নিষ্কাশন লাইনের মাধ্যমে (পায়খানার সাথে) শহর থেকে বের করে দেয়। কি অদ্ভুত শাস্তি মাস্তানদের!
.
খুব মজা লাগছে তাই না?
এইচ ডি এল কে বন্ধু বন্ধু লাগছে তাই না?
পুলিশের ছোট ভাই লিটল ডি এল বা সংক্ষেপে এল ডি এল আবার রাজনীতিবিদ। সে লবিং করে জেলখানা থেকে কোলেষ্টেরল বা ট্রাইগ্লিসারাইড রুপী মাস্তানদের তুলে এনে আবার রাস্তায় বসিয়ে দেয়। তাদের মাতলামো তে পুরো শরীরে জ্যাম লেগে যায়। আর এলডিএল মুখ টিপে টিপে হাসে।
এইচ ডি এল হায় হায় করে দৌড়ে আসে। কিন্তু সে এলডিএল আর মাস্তানদের যৌথ শক্তির সাথে পেরে ওঠেনা। পুলিশের সংখ্যা যত কমে মাস্তানরা ততই উল্লসিত হয়। শহরের পরিবেশ হয়ে ওঠে অস্বাস্থ্যকর।
এমন শহর কার ভালো লাগে বলুন?
.
আপনি মাস্তানদের কমিয়ে পুলিশ বাড়াতে চান?
তবে হাঁটুন।
আপনার প্রতি কদমে এইচডিএল (পুলিশ) বাড়বে, এলডিএল (লবিং করা রাজনীতিবিদ) কমবে, মাস্তান (কোলেষ্টেরল) কমবে! আপনার শহর (শরীর) প্রানচাঞ্চল্য ফিরে পাবে।
আপনার প্রানকেন্দ্র (হার্ট) মাস্তানদের অবরোধ (হার্ট ব্লক ) থেকে বাঁচবে।
আর শহরের প্রানকেন্দ্র (হার্ট) বাঁচা মানে আপনিও বাঁচবেন।
No comments